প্রিন্ট এর তারিখঃ Jan 15, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Jan 1, 2025 ইং
ব্রিপিশ দুর্নীতি বিরোধী পদ থেকে টিউলিপকে অপসারণ
বাংলাদেশের পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় যুক্তরাজ্যের লেবার সরকারের প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে দুর্নীতিবিরোধী কাজের দায়িত্ব থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা। দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল লিখেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটম এবং কোম্পানিটির সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অন্তত ৪৫টি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল স্যাংশন ইমপ্লিমেন্টেশন অফিস। আর ওই অফিস দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন স্বয়ং টিউলিপ। এখন রোসাটমের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি থেকে অর্থ আত্মসাতে অভিযোগে অভিযুক্ত টিউলিপ। কনজারভেটিভ পার্টির স্বরাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র ম্যাট ভিকার্স বলেছেন, টিউলিপের ব্যক্তিগত লেনদেন সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর না মেলা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতিবিরোধী নীতিগত সিদ্ধান্তের দায়িত্ব থেকে অবশ্যই তাকে সরিয়ে রাখতে হবে কিয়ার স্টারমারকে।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের বরাতে ডেইলি মেইল লিখেছে, অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে, তা ঘটেছে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে, যখন টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা দোর্দ- প্রতাপে প্রধানমন্ত্রিত্ব চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
অবশ্য কথিত দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনকে ‘উসকানিমূলক’ দাবি করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটম। এ ধরনের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকিও দিয়েছে তারা।
ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা এবং মা শেখ রেহানা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর দুদক তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিলে সেখানে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি টিউলিপের নাম আসে। তারপর থেকে ব্রিটিশ মিডিয়ায় তাকে নিয়ে শোরগোল চলছে।
২০১৩ সালে ক্রেমলিনে তৎকালীন লেবার কাউন্সিলর টিউলিপের উপস্থিতিতে শেখ হাসিনা ও ভøামিদির পুতিনের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই ছবিও এখন ঘুরে ফিরে আসছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ‘আত্মসাৎ’ করেছেন, যা ‘পাচার করা হয়েছে’ মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে।
ব্রিটেনের মন্ত্রিপরিষদ দপ্তরের প্রোপ্রাইটি অ্যান্ড ইথিকস দলের একজন ওই অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যে টিউলিপকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। সেখানে ওই অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেছেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি। ডেইলি মেইল লিখেছে, কনজারভেটিভরা টিউলিপকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে দাবি তুলেছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়। আর লেবার পার্টির নেতারা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সমর্থনে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ সংবাদ ৭১ বিডি